কবিতা: "উপলব্ধি"
লেখা : নূর ই জান্নাত রিফা
মা'এর কপালে
চিন্তার ভাঁজ, আর
শুকনো মুখের করুণ চাহনি!
স্পষ্টই বলে দিচ্ছে- বাবা এখনো বাড়ি ফেরেনি।
আজ ছিল,
উনাদের বিবাহ-বার্ষিকী।
জাঁকজমকহীন অথচ আনন্দে পরিপূর্ণ আয়োজন,
তবুও দেখুন, বাড়ি ফেরাটা যেন উনার নিষ্প্রয়োজন।
রাত বারোটা?
সে তো আরও দেড় ঘন্টা আগেই পেরিয়েছে!
অভিমান ক্রমশ রাগে পরিণত হচ্ছে,
খেয়ালই নেই, এদিকে ফোনটা বেজেই চলেছে।
রিসিভারে চাপ দিতেই- হঠাৎ বজ্রপাত!
বুঝলাম- বাবা আমার বড়ই বিপদে!
এক ছুটে চলে গেলাম হসপিটালে,
রক্তাক্ত বাবা, এক্সিডেন্ট নামক ভয়ংকর ছোবলে!
রক্ত লাগবে রক্ত!
শক্ত প্রাণের তাজা তাজা রক্ত!!
অসহায় মায়ের চোখে
প্রিয়জনকে বাঁচানোর করুণ আঁকুতি!
'ব্লাড-সার্কেল'- এহেন বিপদেও জ্বালায় আলোর জ্যোতি!
বরাবরই এড়িয়ে চলা পোস্ট-গুলো থেকে,
ফোন নাম্বার খুঁজে বের করে,
বাধ্য হলাম কান্না জড়িত কন্ঠে বলতে;
" আমি আবারও যে চাই-
বাবার মুখে আদুরে গলায় 'রিফা-মনি' ডাক শুনতে!
আমি আবারও দেখতে চাই-
বাবা-মা'কে হাসিমুখে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকতে!"
সেদিন,
৪৫০ মিলি রক্তদানের মাধ্যমে,
'ব্লাড-সার্কেল' আমায় দিয়েছিল, সারাজীবনের স্বপ্ন বাঁচিয়ে!
শিখিয়েছিল মানবতার ধর্ম, মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়ে।
এখন, মা'ও আমাকে
আর রক্তদানে বাঁধা দেন না।
বরং বলেন, " দান করি চল বাহানা ছাড়াই রক্ত,
সুস্থ থাকি, সুস্থ রাখি, কান্ডারী হোক শক্ত।"
(17 জুন, 2020)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন